অপেক্ষা - লিখেছেন - সোহাগ হাওলাদার
চতুর্দিকে নিস্তব্ধতা, পাখিরা এখনও ওঠেনি।
এমন সময় কে যেন আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে রীতিমতো অবাক হলাম।
লাল শাড়ি পরা এক তরুণী দাড়িয়ে আছে, হাতে লাল কাচের চুড়ি,ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, চোখে হালকা কালো রঙের কাজল।
সে এক মায়াবী চেহারা ।
ভোরের আলোয় সৌন্দর্য্য আরও ফুটে উঠেছে।
চোখ মুছতে মুছতে বললাম , তুমি ?
হ্যা আমি।
আজ দুজনে মেঘের ভেলায় চড়ে ঘুরতে যাব আকাশের নীল নীলিমায়।
আমি অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর বললাম, সকাল সকাল রসিকতা ভালো লাগে না।
রসিকতা নয় আমরা আবার অজানা গন্তব্যে পারি দিতে যাচ্ছি ।
কিন্তু ?
কোনো কিন্তু নেই এই শহর আজ সুস্থ , বাতাসে আজ লাশের গন্ধ নেই । প্রকৃতি আমাদের ডাকছে ।
আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছিনা।
তবুও বের হলাম।
সবুজ পাঞ্জাবি আর লাল শাড়িতে আমাদের কেমন লাগছে জানি না ।
আমাদের দুজকে বর্ণনা করার মতো,এতটা কল্পনা শক্তি আমার নেই ।
অনেক দিন পর ধূলো জমা শহরে আমাদের পদচিহ্ন পরল ।
প্রকৃতি যেন আজ নতুন রূপে সেজেছে , মনে হচ্ছে কোনো উৎসব লেগেছে শহর জুড়ে।
আমরা দুজনে হাতে হাত রেখে প্রথমে গেলাম সেই বটবৃক্ষের নিচে যার ছায়ায় কাটানো সময় ভোলা অসম্ভব।
সব কিছু আগের মতোই আছে ।
দুজনে পাশাপাশি বসে এতো দিনের সব জমানো কথা বলা শুরু করলাম ।
কিছুক্ষণ পর আবার হাঁটতে শুরু করলাম।
প্রকৃতির এই রকম বিচিত্র রুপ আগে কখনো দেখিনি ।
মনে হচ্ছে প্রকৃতি আমাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।
ভাবিনি কখনো ফিরে পাব এই সুস্থ শহর, ভাবিনি ফিরে পাব এই মায়া ভরা প্রকৃতি।
আমি সত্যি বলছি প্রিয়তমা ,ভাবিনি কখনো ফিরে পাব সেই তোমাকে । আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি না তো ?
সে তার লাল শাড়ির আঁচল দিয়ে আমার কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বলছে , না এটা কোনো স্বপ্ন নয় ,এটা বাস্তব।
হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে গেলো।
আমি কি তাহলে সত্যিই স্বপ্ন দেখছিলাম?
হয়তো স্বপ্ন দেখেছি তবুও আমার বিশ্বাস এই স্বপ্ন একদিন বাস্তবে রুপান্তর হবেই,
ফিরে আসবে সেই সুস্থ্য শহর , ফিরে আসবে সেই দিনগুলো।
সেই আনন্দময় সময়ের অপেক্ষায় থাকব ।
হ্যা আমি তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকব।
+লেখক: সোহাগ হাওলাদার
বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল, যশোর। অবিরাম ছুটে চলেছে অজানা গন্তব্যে।
ফেসবুক আইডি:আইডি লিংক