আমাদের পরিচিত বাকরখানি নামটির সাথে জড়িয়ে আছে অনেকেরই অজানা এক ইতিহাস। মোঘল আমলের খাবারগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় ও প্রচলিত ছিল পুরান ঢাকার বাকরখানি। ঐতিহাসিকদের মতে, লালবাগ কেল্লার কাছেই প্রথম বাকরখানির দোকান গড়ে উঠেছিলো। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে বিভিন্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করে খাবারটি। ঢাকার চানখাঁরপুল, নাজিরাবাজার ও বংশাল এলাকায় রাস্তার দুই পাশে চোখে পড়বে পরপর অনেক দোকান। এখানে প্রতি পিস বাখরখানি বিক্রি হয় ৪- ৫ পাঁচ টাকায় এবং কেজি ১২০- ১৫০ টাকা।

জনশ্রুতি আছে যে, মির্জা আগা বাকের ঢাকায় বাকরখানি রুটির প্রচলন করেন। তিনি বৃহত্তর বরিশালের জায়গীরদার ছিলেন। তার প্রেয়সী ছিলো আরামবাগের নর্তকী খনি বেগম। তাদের মধ্যে গভীর প্রেম ছিলো বলে কথিত আছে। পরবর্তীতে আগা বাকের ২য় মুর্শিদকুলি খাঁর কন্যাকে বিয়ে করেন। কিন্তু খনি বেগমের স্মৃতি তিনি ভুলে যাননি। বিশেষভাবে তৈরি করা তার আবিস্কৃত প্রিয় রুটিটির নাম তারই প্রেমকাহিনীর উপর ভিত্তি করে হয়ে যায় বাকের- খনি রুটি। পরবর্তীতে এটি কিছুটা অপভ্রংশ হয়ে বাকরখানি নাম ধারণ করে। জনশ্রুতি মেনে নিলে ধরে নিতে হয় যে, বাখরখানির সৃষ্টি আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাকলা- চন্দ্রদ্বীপ (পটুয়াখালি- বরিশাল) অঞ্চলের বাকেরগঞ্জ নামকরণ হয় জায়গীরদার মির্জা আগা বাকেরের নামেই। আর এভাবেই বাকরখানি হয়ে ওঠে আমাদের ভোজনরসিক বাঙালী জীবনের আরেকটি সংযোজন।

দেশের আনাচে- কানাচে ভিন্ন স্বাদের খাবার চেখে দেখার আকর্ষন ছিলো কলেজে থাকা অবস্থায়। তখন ফুড ব্লগ করবো এমন চিন্তাও ছিলোনা। শখের বসে দুই একটি ফুড ব্লগ করে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে আপলোড দেয়া শুরু করি কয়েক বছর আগে। খাবারের প্রতি যে মানুষের এত আকর্ষণ আস্তে আস্তে তা আমার বোধগম্য হতে থাকে আপনাদের সাড়া পেয়ে। এভাবেই একদম হঠাৎ করে একজন ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয় আমার। আপনাদের সমর্থন পেলে এখন থেকে নিয়মিত লেখালেখি করতে চাই। ঘুরে আসুন আমার ৪৯ হাজার জনের ইউটিউব পরিবার থেকে।

আমার ইউটিউব চ্যানেলের একদম প্রথম দিকের একটি ভিডিও, বাকরখানি রহস্য:


লেখক: মুরাদ হাসান, ভ্রমণপিপাসু ফুড ব্লগার।
ফেবু লিংকঃ লিংক