ক্রুসেড ১ম পর্ব

আগের পর্বে আমরা ক্রুসেডের কারণগুলো আলোচনা করেছিলাম। এখন ঘটনা প্রবাহ জানবো।


১ম ক্রুসেড: 

ফলাফল: খ্রিস্টানদের বিজয়। জেরুজালেম, ল্যাভেন্টের কিছু অংশ (বর্তমানের লেবানন ও সিরিয়ার পশ্চিমের কিছু অংশ এবং আনাতোলিয়ার (বর্তমানে তুরস্কের অংশ) কিছু অঞ্চল দখল। দখলকৃত অংশগুলোকে নিয়ে ক্রুসেড রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।


বিবাদমান পক্ষ:

খ্রিস্টানদের পক্ষে হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে:
রোমান সাম্রাজ্য, কিংডম অব ফ্রান্স, কাউন্টি অব সিসিলি, কাউন্টি অব ফ্ল্যান্ডারস, প্যাপাল রাষ্ট্রপুঞ্জ, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য, আর্মেনীয় সিলিসিয়া, কাউন্টি অব অ্যাপুলিয়া, কাউন্টি অব ক্যালাবারিয়া (অ্যাপুলিয়া ও ক্যালাবারিয়া মূলত ইতালীয় ভূখণ্ড) এবং মধ্য ইউরোপীয় খ্রিস্টান রাজ্যগুলো।

মুসলিমদের পক্ষে অংশগ্রহণ করে:
ফাতেমীয় খিলাফত, সেলজুক সাম্রাজ্য ও আব্বাসীয় খিলাফত।

দলনেতা:  

খ্রিস্টানদের নেতা:-

দক্ষিণ ফ্রান্স:
Raymond IV of Toulouse, Adhemar of Le Puy

উত্তর ফ্রান্স ও ফ্ল্যামিশ:
(গডফ্রে) Godfrey of Bouillon, (বল্ডুইন) Baldwin of Boulogne, Hugh of Vermandois, Stephen II of Blois,
Robert II of Flanders, Robert II of Normandy এবং Peter the Hermit

ইতালীয় নরম্যান:
Bohemond of Taranto,Tancred of Hauteville, Richard of Salerno

পূর্বাঞ্চলীয়:
Alexios Komnenos,Tatikios, Manuel Boutoumites, Constantine of Armenia


মুসলিমদের নেতা:-

ফাতেমীয় খিলাফত: আল আফজাল শাহানশাহ, ইফতেকারদ্দৌলা।

সেলজুক সাম্রাজ্য:
Kilij Arslan I, Yaghi-Siyan, Kerbogha, Duqaq, Fakhr al-Mulk Radwan

Danishmends:
Gazi Gümüshtigin


যুদ্ধের আগের ঘটনা:

১০৭১ সালে মালাগির্জদের যুদ্ধে বাইজেন্টাইনরা পরাজিত হওয়ার পর বাইজেন্টাইনরা সেলজুকদের সাথে যুদ্ধ করতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলো। কারণ সেলজুকরা তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত ছিলো। তাই ১০৯৫ খ্রি. বাইজেন্টাইন সম্রাট Alexios I Komnenos রোমান ক্যাথলিক চার্চ তথা Pope Urban II এর কাছে সাহায্য চায় সেলজুকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। পোপ ঠিক এমন কিছুরই আশা করছিলো। এখানে বলে রাখা ভালো যে, "তখন কিন্তু পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যে ও পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্যে (বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য) বিভক্ত ছিলো এবং এই বিভক্ত দূর করার জন্য রোমান ক্যাথলিক চার্চ চেষ্টা চালাচ্ছিলো কারণ রোমান ক্যাথলিক চার্চ ধর্মের চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিতো। তৎকালীন সময়ে কোনো ইউরোপীয় রাজা বা রানী চার্চের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সহসা সাহস দেখাতো না।" নিচে গাঢ় হলুদ বর্ণ দ্বারা পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্য, সবুজ দ্বারা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ও হালকা হলুদ দ্বারা ইসলামীয় খিলাফত বোঝানো হয়েছে।
 



Pope Urban II এর কাছে Alexios I Komnenos এর সাহায্য প্রার্থনায় পূর্ব ও পশ্চিম একত্রিত করে অভিন্ন খ্রিস্টানবিশ্ব গড়ার সুযোগ ছিল রোমান ক্যাথলিক চার্চের। তাই Pope Urban II সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং একই বছর Urban II রোম ছেড়ে তার মাতৃভূমি ফ্রান্সে ফিরে যায়। তিনি ফ্রান্সের রাজা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। এই আলোচনা আসল উদ্দেশ্য ছিলো ক্রুসেড শুরু করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন।

এর পরের বছরই অর্থাৎ ১০৯৬ খ্রি. Pope Urban II এর অন্যতম বিশ্বস্ত সহচর Peter the Hermit এর নেতৃত্বে ফ্রান্সের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের সৈন্যদের ক্রুসেডে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানায়। এতে যোগ দিতে শুরু করে সাধারণ মানুষ। আর প্রথমেই এই প্রতিহিংসার শিকার হয় ইহুদীরা কারণ খ্রিস্টানদের মতে যিশুকে ইহুদীরা ক্রুসবিদ্ধ করেছিলো। ক্রুসেডের সূচনা প্রথম শুরু হয় সাধারণ মানুষদের দ্বারা, বিশেষ করে কৃষকরা এই ধর্মযুদ্ধের‌ নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যার প্রথমে ফলাফল দাঁড়ায় ফ্রান্সের মিৎজ শহরে ইহুদিদের গণহত্যা এবং এতে পোপের বিশ্বস্ত সহচর Peter the Hermit সরাসরি জড়িত ছিলো।

মোঃ আরিফ খান
স্বাপ্নিক,রুচিশীল একজন সাধারণ ছাত্র। E-Mail:arianaling773@gmail.com
fb id : Arif Khan