সময়ের ধাঁধা - লিখেছেন - হাসনাত বিন হাবীব (তুরাব)
দোচালা তাহার টিনের ঘর,
আলোর দেশে, আলোই হইয়াছে পর।
কুপির তৈল ফুরাইয়া শুণ্য,
দেনার দায়ে,
সে কাঁদিয়া হন্য।
নির্ঘুম রাত্রিরে সে বসিয়া একা;
কাঁদিতেছে পাশে ক্ষুধার্ত খোকা,
ঘুমাইলো খোকা কতক মিথ্যার ছলে-
পান্তা ভাতও বাসা বাঁধেনি তাহার ঘরে।
আচমকা কহিয়া উঠিলো হিয়া;
আহার কি পাবি?
কাঁদিলে দুচোখ ভরিয়া।
তোদের ধন যারা করিয়াছে চুরি,
যা! ভাঙ্গিয়া দে তাহাদের, রাক্ষসপুরী।
দেখগে!
বাবুসাবের পসরায় পোলাও, কোরমা;
ঋণের কষাঘাতে,
তুলিয়া পিঠের চামড়া।
সে দেখিয়াও দেখেনি,
বুঝিয়াও বোঝেনি।
ধরিয়া আছে যোগী-সাধুর বেশ;
পীড়নের পাটাতলে,
কতক অসহায়ই শেষ।
ঘর্ম সিক্ত বক্ষ,
শুকাইলো তাপে কতো শতবার!
দুসমুদ্র ঘামের দামে,
জুটিবেনা কি, দুমুঠো আহার?
না! আরতো পারিনা সইতে;
বাবুসাবরে হবেই মোর কইতে,
হয়তো শুনিয়া মোর দুখের জ্বালা;
প্রভু! খুলিতে পারে তাহার মনের তালা।
কহিলাম,
বাবুসাব, ঘরে মোর খোকা ক্ষুধার্ত;
জোগাইতে পারলুমনে দুচারটি অর্থ,
দোহাই লাগে! মোরে কিছু সময় দিন;
মিটিয়ে দেবো, সুধে-আসলে আপনার ঋণ।
বলে কি হতচ্ছারা!
শোন! চলিবেনা অজুহাতের বাহার,
সময়মতো না দিলে ঋণ-
পিঠে পড়িবে বেদম প্রহার।
ধরি আপনার চরণ মহাশয়,
নির্বিত্তের প্রতি কেন এতো নির্দয়?
দোহাই লাগে, করুণ একটুখানি দয়া;
দূর হ ছোটলোক!
নচেৎ পড়িবে শোকের ছায়া
হায়রে বাবুসাব!
আজ নাহয় যাবো চলিয়া;
শুনিয়া লন মস্তক ভরিয়া!
আসিবে সে সুদিন,
শুধিতে হইবে, আপনার নয়,
আমার ঋণ!
সময়ের ধাঁধাঁ বড্ড তাজ্জব;
কাঙ্গালরে বানায় রাজা,
রাজার কাড়িয়া লয় সব।
+লেখক: হাসনাত বিন হাবীব (তুরাব)।
গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুলের একজন ছাত্র। প্রকৃতি এবং বাস্তবতাকে খোঁজার চেষ্টা করছি।
ফেইসবুক আইডি:ফেসবুক আইডি