দোচালা তাহার টিনের ঘর,

আলোর দেশে, আলোই হইয়াছে পর।

কুপির তৈল ফুরাইয়া শুণ্য,

দেনার দায়ে,

                 সে কাঁদিয়া হন্য।

নির্ঘুম রাত্রিরে সে বসিয়া একা;

কাঁদিতেছে পাশে ক্ষুধার্ত খোকা,

ঘুমাইলো খোকা কতক মিথ্যার ছলে-

পান্তা ভাতও বাসা বাঁধেনি তাহার ঘরে।

আচমকা কহিয়া উঠিলো হিয়া;

আহার কি পাবি?


                        কাঁদিলে দুচোখ ভরিয়া।

তোদের ধন যারা করিয়াছে চুরি,

যা! ভাঙ্গিয়া দে তাহাদের, রাক্ষসপুরী।

দেখগে!

বাবুসাবের পসরায় পোলাও, কোরমা;

ঋণের কষাঘাতে,

তুলিয়া পিঠের চামড়া।

সে দেখিয়াও দেখেনি,

                            বুঝিয়াও বোঝেনি।

ধরিয়া আছে যোগী-সাধুর বেশ;

পীড়নের পাটাতলে,

                          কতক অসহায়ই শেষ।

ঘর্ম সিক্ত বক্ষ,

শুকাইলো তাপে কতো শতবার!

দুসমুদ্র ঘামের দামে,

                           জুটিবেনা কি, দুমুঠো আহার?

না! আরতো পারিনা সইতে;

বাবুসাবরে হবেই মোর কইতে,

হয়তো শুনিয়া মোর দুখের জ্বালা;

প্রভু! খুলিতে পারে তাহার মনের তালা।


কহিলাম,

বাবুসাব, ঘরে মোর খোকা ক্ষুধার্ত;

জোগাইতে পারলুমনে দুচারটি অর্থ,

দোহাই লাগে! মোরে কিছু সময় দিন;

মিটিয়ে দেবো, সুধে-আসলে আপনার ঋণ।

বলে কি হতচ্ছারা!

       শোন! চলিবেনা অজুহাতের বাহার,

       সময়মতো না দিলে ঋণ-

       পিঠে পড়িবে বেদম প্রহার।


ধরি আপনার চরণ মহাশয়,

নির্বিত্তের প্রতি কেন এতো নির্দয়?

দোহাই লাগে, করুণ একটুখানি দয়া;

       দূর হ ছোটলোক!

       নচেৎ পড়িবে শোকের ছায়া


হায়রে বাবুসাব!

আজ নাহয় যাবো চলিয়া;

শুনিয়া লন মস্তক ভরিয়া!

আসিবে সে সুদিন,

           শুধিতে হইবে, আপনার নয়,

           আমার ঋণ!

সময়ের ধাঁধাঁ বড্ড তাজ্জব;

কাঙ্গালরে বানায় রাজা,

রাজার কাড়িয়া লয় সব।




+লেখক: হাসনাত বিন হাবীব (তুরাব)।

গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুলের একজন ছাত্র। প্রকৃতি এবং বাস্তবতাকে খোঁজার চেষ্টা করছি।


ফেইসবুক আইডি:ফেসবুক আইডি