আর যাই হোক, শত ব্যস্ততা কিংবা শত কর্মকান্ড, দিন শেষে নিজের বিধ্বস্ত শরীরটা নিয়ে একটা তাড়া থাকে বাড়ি ফেরার, আপনজনদের কাছে ফেরার, সেটা একটা সন্তান হোক, একটা পিতা হোক কিংবা একটা মাতা হোক। একজন রিকশাওয়ালা থেকে একজন ডাক্তার, কেউই এই ধারার বাইরে না। আমরা মানুষ সময়, পরিস্থিতিতে একটি গাছ থেকে আলাদা হয়ে যাই, আবার নির্দিষ্ট একটা সময় পর একটা টানে, সেই শিকড় অর্থাৎ পরিবারেই ফিরে যাই। সেদিন একটা পত্রিকার রিপোর্টে পড়লাম, ঢাকা শহরের ৭১% মানুষ বিষন্নতায় ভুগছে। ইন্টারেস্টিং তাই না, আসলে আমরা বাচঁতেই ভুলে গেছি। নিজের মত করে বাঁচতে হলে আমাদের আগে শেকড়ের টানে ফিরতে হবে। যারা আমার মলিন মুখটা দেখে কোন কিছু বলার আগেই একবার জিজ্ঞেস করবে, কিরে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন? এই যে মানুষ গুলো গ্রাম থেকে জাদুর শহরে আসে, শহরের লাল নীল লাইট কয়েকদিন পর আর ভাল লাগে না, সোডিয়াম লাইট গুলোকেই তখন আপন মনে হয়, নিজের কাছে তখন নিজের ছায়া ছাড়া আর কোন কিছুই থাকে না। একে বাসায় রেখে আসা আপনজনদের চিন্তা, অন্যদিকে এই লাল নীল লাইটের জাদুর শহরের মানুষ গুলোর মুখোশ পরে চলাফেরা, এইসবের ভেতর আর যাই হোক, একজন মানুষ আর সাধারন থাকতে পারে না। রোবটিক এই জীবনে, রক্ত মাংসের রোবট গুলোরও একটা মন আছে, এই মানুষ গুলোও নিজের পরিবারের সাথে বাঁচতে চায়, কিছু মুহূর্ত চায়। কিন্ত এই জাদুর শহরের অদ্ভুত এক টানে এইসব আর হয়ে উঠে না, উঠলেও তা ক্ষণস্থায়ী। আমাদের সবকিছু আমরা নিজেদের শারীরিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বিলিয়ে দেই, আত্মিক শান্তি নামক জিনিসটা আজ আমাদের মানুষদের থেকে বিদায় নিয়েছে। এইজন্যই টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে পত্রিকার পাতা, সব খানেই আত্নহত্যার জয়জয়কার। মানুষ হিসেবে না আমরা বর্তমানে ব্রেইন ওয়ালা রোবট হিসেবে অবস্থান করছি এই পৃথিবী তে... আবার, নাড়ীর টানে অনেকেরই ফেরা হয় না শেকড়ে....


লেখকঃ আমিনুল ইসলাম মৃদুল

সমাজ কি বলবে ভেবে দেখার আগে, ভেবে যাই আল্লাহ কে কি উত্তর দিব পরে..?