শিশু সাহিত্যের লক্ষ্য - রিদওয়ানুল হাসান
সাহিত্যের এক ছোট্ট উপশাখা শিশুতোষ সাহিত্য। শিশুতোষ সাহিত্য বলতে কী বোঝায়? শিশুতোষ সাহিত্য কি শুধুই রূপকথার কোনো গল্প? শুধুই ফ্যান্টাসি? শুধুই কাল্পনিক সত্তার অবাস্তব ঘটনার অযৌক্তিক কাজ? কিংবা কিছু নীতি কথা বা উপদেশ? কিছু এলোমেলো ছন্দে রচিত ছড়া যার কোনো অর্থ নেই? নাকি ভূত-প্রেতের গল্প? না এর আছে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলা যাক, আমরা যারা সুপারহিরো মুভি দেখেছি তারা জানি যে সেখানে বৃহদার্থে কী বোঝানো হয়। দেখা যায় সুপারহিরোরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, তারা একটি মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে, দেশের জন্য জীবন বিপন্ন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। বিভিন্ন চলচ্চিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যায় তারা একটি বিশেষ বার্তা সেই চলচ্চিত্র দ্বারা বোঝাতে চায়।
সমস্ত সৃজনশীল কাজের মধ্যে একটি লুকায়িত বার্তা থাকে। সেই বার্তা বিভিন্ন মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয়। তা হতে পারে চিত্র শিল্পের মাধ্যমে, হতে পারে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, হতে পারে সঙ্গীত শিল্পের মাধ্যমে এবং হতে পারে বইয়ের মাধ্যমে। এইসব বার্তার মধ্যে সব গুরুত্বপূর্ণ বা অত্যন্ত দরকারি এমনটা নয়। তবে মানুষ হিসেবে আমাদের সকলের কিছু মানবিক গুণ থাকা অত্যাবশ্যক। বর্তমানে সে গুণ গুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে দেশ প্রেম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, সমাজ ও সংস্কৃতির বিকাশ সাধন উন্নয়ন। এক্ষেত্রে প্রথম গুণটি প্রবল হলে বাকি দুটিও এর মধ্যেই ধরা পড়ে।
দেশপ্রেমের এই বোধটির বীজ রোপণ করা উচিত শিশুসাহিত্যেই এবং এ কাজটি শিশু সাহিত্যিকের। তবে সরাসরি উপদেশ দিয়ে নয়। তা হতে হবে মনোরঞ্জক কোন গল্পে লুকায়িত বার্তা। দেশ প্রেম যেন প্রকাশ পায় রূপকথার চরিত্রের কর্মে। ভুত-প্রেত ও যেন গায় দেশের গুণগান।
একবার এক শাসক, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক জ্ঞানী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেছিলেন আপনার বিশ্বস্ততা কার প্রতি?উত্তরে জ্ঞানী মানুষটি বলেছিলেন, দেশের প্রতি।