‘কপালকুন্ডলা’! এমন নামও মানুষের হয়, নামটাই তো সবার আগে মনে কৌতুহল সৃষ্টি করে, সমুদ্রতরঙ্গের মত উথাল-পাতাল মন নাচতে শুরু করে। কি অর্থ এই নাম এর, কেন এই অদ্ভুত নাম, মানুষের নজর অদ্ভুত জিনিসেই আটকে যায়। কখনো সমুদ্র পথে পথ হারিয়েছে আপনাদের নৌকা, সারাদিন ক্ষুধায় কাতর আপনি যখন নৌকা একটা দ্বীপে বেরানোর পর সবার অনুরোধে খাবার সংগ্রহ করতে যান এবং এসে দেখেন সেই নৌকা আপনাকে এই নির্জন দ্বীপে একা ফেলে চলে গিয়েছে কেমন হবে...?  ঠিক তখনি এক মায়াবি কন্ঠ এসে আপনাকে পেছন থেকে  মুগ্ধ নয়নে  জিজ্ঞেস করে, "পথিক তুমি পথ হারাইয়াছো?” কেমন হবে? কিন্ত তখনই জানতে পারেন এক তান্ত্রিক আপনাকে বলি দিবে পুজার জন্য। মনের কি অবস্থা হবে?  মোঘল সম্রাজের সাথে তান্ত্রিক, মায়াবিনী সেই কপালকুন্ডলা এর সাথে নবকুমার কিভাবে সংযুক্ত? সেই সাথে প্রতি পৃষ্ঠায় বাহারি সব শব্দের খেলা। একবার রোমান্টিক একবার ভৌতিক সব মিলিয়ে বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উপন্যাস- কপালকুন্ডলা...  বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নামটা শুনলেই অনেকে কেঁপে উঠেন তার ভারি শব্দের ব্যবহারের জন্য যা এই উপন্যাসেও বিদ্যমান ছিল। সংস্কৃত, আরবি, ফারসি শব্দের ব্যবহারও লক্ষণীয় ছিল। তবে বঙ্কিম মানেই বিশেষ কিছু আর শব্দের বাহারী খেলা, যা আমার সবচেয়ে বেশী প্রিয়। বাংলা উপন্যাসের সবচেয়ে প্রথম রোমান্টিক লাইন, "পথিক তুমি পথ হারাইয়াছো " কিংবা আশ্চর্য সেই উক্তি, "তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম না হইবো কেন?" সবশেষে, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর অন্যতম সেরা সৃষ্টি তার দ্বিতীয় উপন্যাস " কপালকুন্ডলা "।




বই : কপালকুন্ডলা
লেখক : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পৃষ্ঠা: ৯৫
মূল্য : ১২০




লেখকঃ আমিনুল ইসলাম মৃদুল

সমাজ কি বলবে ভেবে দেখার আগে, ভেবে যাই আল্লাহ কে কি উত্তর দিব পরে..?