সৈয়দ নুরুল্লাহ হেল বাকীর ৪টি কবিতা
১.
তাবিজ - কবজের মাহাত্ম্য
বয়োবৃদ্ধ পরিচিত জনৈক তাবিজ বিক্রেতা,
জানতে চাইলাম যবে তার তাবিজের ক্ষমতা।
আছে ক্রেতা তাই মোর সামগ্রিক সফলতা।
বিজ্ঞোচিত জবাবে তার,
বিস্ময়ে দূরীভূত ঘোর।
বিস্তারিত বিবরণ তার --
সরল বিশ্বাস আর গভীর মনের জোর,
রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে হতে পারে
আংশিক কার্যকর।
সুষম খাবার আর স্বাস্থ্যবিধি
যথাযথ করলে পালন,
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি
নিরাময়ের অন্যতম কারণ।
নির্দিষ্ট সময় শেষে,
কিছু জীবাণু এমনিতেই নাশে ;
তাই সবক্ষেত্রেই তাবিজ-কবজ
যায়না বিফলে।
উপশম কিংবা নিরাময় কিছুই না হলে,
অদৃষ্টরে দোষারোপ চিরকালই চলে।
২.
বিচিত্র চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
বোকা ব্যক্তির আচরণ
হতে পারে বিরক্তির কারণ,
না পাওয়া গেলেও উপকার তেমন --
যৎসামান্যই হয় অনিষ্টসাধন।
তাদের দ্বারা যে ক্ষতি ,
নগণ্য বা তুচ্ছ অতি ;
অতি সহজেই যায় করা
উদ্ভূত সমস্যার সমাধান।
যতো চতুর ততো ফতুর
এটা নাকি কথার কথা,
চালাক-চতুর লোকেরাই
দিতে পারে বেশি ব্যথা ;
কাঁঠাল ভাঙতে ব্যবহার করে
বোকা লোকের মাথা ।
জ্ঞানীদের জ্ঞান বেশি
জ্ঞানদান অনেক কম,
সব আসরেই বুলি কপচাতে
বুদ্ধিজীবীরা পারঙ্গম ;
নিজের খেয়ে বনের মোষ
তাড়ানোতে প্রচুর দম।
তথাকথিত শিক্ষিতদের
নিচের দিকে দৃষ্টি কম,
বুদ্ধিমান অসৎ নেতা
গরীব-দুঃখীর সাক্ষাত যম।
৩.
ক্ষমতা
কোনো কোনো chair,
চেয়ার মানেই power,
অনেক ক্ষমতার gear,
তাই পদায়ন খুবই dear.
দূর হয় অনেক fear,
করে তোলে অধিক dare,
করেনা কাউকে care,
যেন রয়েল বেঙ্গল Tiger.
সুনিশ্চিত অনেক সুবিধার share.
আপাতদৃষ্টিতে যদিও bright future.
কেননা শাস্তি প্রাপ্তি বেশ rare.
বাগান-মালিক বলিছে নফরে--
গরুটাকে বেঁধে রাখো রশি ছোট করে,
নইলে সখের বাগান থাকবে
নাগালের ভিতরে।
সাধ্য কি আছে কারো
ক্ষমতাধরের নির্দেশ উপেক্ষা করে?
তাই রশি কেটে ছোট করে,
আরো কাছে খুঁটি এনে
গেড়েছি সাবধানে।
অবিলম্বে খুঁটি খুলে দিতে ফেলে
মালিকের আদেশে,
খুঁটি থেকে রশি খুলে বাগানের কার্নিশে ;
সযতনে বাঁধা হলো চোখের নিমেষে।
তাই দেখে ক্রোধান্বিত --
চাকরটাকে প্রহারে উদ্যত,
বলে সে-- এখনতো একভাবে খেয়ে যাবে,
শুধুমাত্র আমারটাই নীরবে।
তার চেয়ে এই ভালো,
রশিটারে খুলে ফেলো,
ভাগে-যোগে খেতে থাক
আরো আছে আশেপাশে।
গালাগালি ঢের বেশি চাকরের বয়ান,
উচিত কি হয়েছে দেয়া কান ধরে টান।
রাতের আঁধারে গায়ের জোরে
দখলীকৃত সাধের বাগান।
অন্যেরা কোনভাবেই করে নাই
তাদের ক্ষেতখামার অনৈতিক গ্রহণ।
৪.
ক-নিয়ে কতো কথা
কণার কাকার কন্যা কলি
কাঁদলো কাকের কাজে,
কাক কেড়েছে কলির কলা
কেউ করেনি না যে।
কুচকুচে কাক কাড়ুক কলা
কাঁদবে কলি কত,
কলা কেনার কথায় কাকী
কাঁদছে ক্রমাগত।
কণা কহে কওতো কাকা
কাঁদছে কেন কাকী ?
কণার কথায় কাকাও কাঁদেন
কণাই কেবল বাকি।
+লেখক: সৈয়দ নুরুল্লাহ হেল বাকী,
সরকারি বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, বর্তমানে অবসরকে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টায় রত।
লেখকের সাথে যোগাযোগ জন্য ইতিহাসনামা টিমের সাহায্য গ্রহণ করুন।